জুড়ীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতা, ক্ষোভ অভিভাবকদের
বার্তালোক ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২:৩২ মিনিটবিশেষ প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের দায়িত্বহীনতার ধরা পড়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত সময় অমান্য করে অনেক শিক্ষক নিজের ইচ্ছেমতো বিদ্যালয়ে আসা–যাওয়া করছেন। এতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে এবং অভিভাবকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
হাজী খুরশিদ আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক শিপ্রা দাশ ও সহকারী শিক্ষক সানজিদা আক্তার এবং রুমি ভট্টাচার্য বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। তবে সহকারী শিক্ষক মো. আবুল কালাম ও বাবলী আচার্য বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে জানায়, সহকারী শিক্ষক সানজিদা আক্তার নিয়মিত তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন এবং অশোভন ভাষা প্রয়োগ করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক শিপ্রা দাশ বলেন, “আমরা প্রতিদিন বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে স্কুল থেকে প্রস্থান করি। এতে সমস্যা কোথায়?”
অভিভাবকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “শিক্ষকদের কাছ থেকে আমরা ভালোবাসা ও স্নেহ প্রত্যাশা করি। কিন্তু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার বা অশোভন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এতে শিশুদের মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।”
হাসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, দুপুর ২টার দিকে প্রধান শিক্ষক ফরমান আলীকে পাওয়া যায়নি। তবে সাংবাদিকরা উপস্থিত হওয়ার খবর পেয়ে তিনি দুপুর ২টা ১৪ মিনিটে বিদ্যালয়ে আসেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি হোম ভিজিটে ছিলাম।” একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নাঈমা আক্তার দুপুরের খাবারের জন্য বাড়িতে গিয়ে বিকেল ২টা ১৫ মিনিটে বিদ্যালয়ে ফেরত আসেন।
প্রধান শিক্ষকের হোম ভিজিট করার সময়
বিদ্যালয়ের পাঠদানের সময় নয়,সাধারণত ক্লাস চলাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষকের হোম ভিজিটে যাওয়া উচিত নয়, কারণ তাঁর উপস্থিতি বিদ্যালয়ের সার্বিক শৃঙ্খলা ও কার্যক্রমের জন্য জরুরি। বিদ্যালয় শেষে বা ছুটির দিনে – হোম ভিজিটের উপযুক্ত সময় হলো বিদ্যালয় শেষ হওয়ার পর, সাপ্তাহিক ছুটির দিন, বা সরকারি ছুটির দিন।
এর আগে গত ২৬ আগস্ট বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে হাসনাবাদ সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়ে গিয়ে তালাবদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়।
আলীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,ভারপ্রাপ্ত প্রাধান শিক্ষক সালমা বেগম।সহকারী শিক্ষক
বাবর আহমদ, মাছুমা আক্তার,বিকেল ৩টা ৫০ মিনিটে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সালমা বেগম নানান অজুহাত দেখান।
শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় সচেতন মহলের দাবি— বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের উপস্থিতি ও আচরণের ওপর কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে। অন্যথায় প্রাথমিক শিক্ষার মান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দিলীপময় দাস চৌধুরী জানিয়েছেন, এ অনিয়মের বিষয়ে তারা অবগত আছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মৌলভীবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শফিউল আলম বলেন, তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।