কুলাউড়ায় বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত যুবলীগ নেতা সেন্টু ও বিএনপি নেতা সাখাওয়াত
বার্তালোক ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ আগস্ট ২০২৫, ৯:৫২ মিনিট
এরআগে গত ২৯ জুলাই বরমচাল ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কমিটিতে সদস্য হিসেবে স্থান করে নেয়া যুবলীগ নেতা আজমল আলী শাহ সেন্টুকে বহিস্কারের জন্য জেলা বিএনপি’র আহবায়ক মোঃ ফয়জুল করিম ময়ূন ও সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন স্বাক্ষরিত একটি চিঠি উপজেলা বিএনপির আহবায়ক, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক ও যুগ্ম আহবায়ক বরাবরে পাঠানো হয়েছিল। সেই চিঠির ভিত্তিতে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক রেদওয়ান খাঁন, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক বদরুল হোসেন খান ও যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল জলিল জামাল সেন্টুকে বহিস্কার করার জন্য বরমচাল ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক আব্দুল জহুর ডেনকে নির্দেশনা দেন। পরে তাকে বিএনপির কমিটি থেকে বহিস্কার করা হয়।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, যুবলীগ নেতা আজমল আলী শাহ সেন্টু বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আওয়ামী যুবলীগের রাজনীতি করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এমনকি আওয়ামী লীগের সকল কর্মকা-ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন। গত বিতর্কিত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের নৌকার প্রার্থী শফিউল আলম চৌধুরী নাদেলের নির্বাচনী প্রচারণায় হাতে লিফলেট নিয়ে যুবলীগ নেতা সেন্টুকে সরব থাকতে দেখা যায়। ২০২২ সালের ১৪ মার্চ বরমচাল ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের আয়োজনে ৭ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে আজমল আলী শাহ সেন্টু সভাপতি ও নিপার আহমদ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এমনকি দলীয় শীর্ষ নেতাকর্মী ও আওয়ামী লীগের মন্ত্রীদের সাথেও তোলা সেইসকল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়। যুবলীগের সভাপতি সেন্টু বিগত ৫ আগস্টের পর নিজের সকল অপকর্ম ঢাকতে বরমচাল ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেনকে কয়েক লক্ষ টাকা দিয়ে বিএনপির কমিটিতে অনুপ্রবেশ করেন। কিন্তু বিভিন্ন অভিযোগের পর সেন্টুকে জেলা বিএনপির নির্দেশে কমিটি থেকে বহিস্কার করায় তেলেবেগুনে জ¦লে উঠেন বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেন। কারণ যুবলীগ নেতা সেন্টুর কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা ভাগিয়ে নিয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন। এজন্য তিনি সেন্টুকে বিএনপিতে পুনবার্সনের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
যুবলীগ নেতা আজমল আলী শাহ সেন্টুকে সাথে নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও অপপ্রচার প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেন এই প্রতিবেদকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ঔদ্ধত্যর্পূণ আচরন করে মুঠোফোনে বলেন, এসব ফাউল কথা। সেন্টু কোথায় থেকে সংবাদ সম্মেলনে ছিল। যুবলীগ নেতা সেন্টুর কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে তাকে পুনবার্সন করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে বলেন আপনি কোন অথরিটি নিয়ে কথা বলছেন। একপর্যায়ে তিনি মেজাজ হারিয়ে ফোন কেটে দেন।
বরমচাল ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল জহুর ডেন বলেন, জেলা ও উপজেলা বিএনপির নির্দেশনা পাওয়ার পর রেজুলেশন করে সেন্টুকে কমিটি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। বর্তমানে বিএনপির বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন সেটা কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়। বিএনপির কমিটি থেকে বহিস্কৃত সেন্টুকে নিয়ে বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেন বিএনপির বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করছেন সেটি আমাদের ও উপজেলা নেতৃবৃন্দের নজরে এসেছে। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক বদরুল হোসেন খান নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, শুনেছি বিএনপি নেতা সাখাওয়াত হোসেন যুবলীগ নেতা সেন্টুর কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা খেয়েছেন তাকে পুনবার্সন করতে। সাখাওয়াতের বিরুদ্ধে আমরা দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক বদরুল হোসেন খান বলেন, বর্তমান সময়ে আমাদের দলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রে যারা লিপ্ত রয়েছেন তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা। সাখাওয়াত হোসেনের বিষয়ে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির আহবায়ক মোঃ ফয়জুল করিম ময়ূন রোববার বিকেলে মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেন, কাউন্সিল হওয়ার পর আর কোন কথা থাকেনা। যারা এখন এসব অভিযোগ করছেন তারা বললেই তো হবেনা। তারা নির্বাচনে গেলনা, তারা নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিল। তাই আমরা কাউন্সিল দিয়েছি। কাউন্সিলের মাধ্যমে বরমচাল ইউনিয়নে ৮ ও ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির কমিটি হয়েছে। যারা এখন দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।#