স্ত্রীর মামলায় পলাতক পৌর কাউন্সিলর শাওন
স্টাফ রিপোর্টার :
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ আগস্ট ২০২৩, ১:২০ মিনিটমৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া দ্বিতীয় বিয়ে করার অভিযোগে পৌর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তারই স্ত্রী।
১৭ আগস্ট কুলাউড়া পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তানভীর আহমদ শাওনের (৫০) বিরুদ্ধে মামলাটি করেন স্ত্রী ইয়াছমিন সুলতানা চৌধুরী (৪৪)। মামলা দায়েরের পর থেকে কাউন্সিলর শাওন পলাতক রয়েছেন।
এছাড়া এই মামলায় আসামী করা হয়েছে সিলেটের বিয়ানীবাজারের চক্রবানী গ্রামের বাসিন্দা মৃত ময়ুর আলী মেয়ে ও কাতার প্রবাসী আবু শাহজানের স্ত্রী ছায়েরা আক্তারকে (৩৮)। সায়রা বর্তমানে শাওনের ২য় স্ত্রী।
শাওন পৌর এলাকার উত্তর মাগুরা এলাকার বাসিন্দা মৃত খলিল উদ্দিন আহমদের ছেলে। তিনি কুলাউড়া পৌরসভার বর্তমান প্যানেল মেয়র।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালের ২৬ আগস্ট কুলাউড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাওনের সাথে বিয়ে হয় হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট থানার নরপতি গ্রামের বাসিন্দা মৃত আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরীর মেয়ে ইয়াছমিন সুলতানা চৌধুরীর। তাদের ২ মেয়ে ও ১ ছেলে সন্তান রয়েছে। ৩য় তলা বিশিষ্ট গৃহ নির্মাণের জন্য শাওন তাঁর স্ত্রী ইয়াছমিনের কাছ থেকে যৌতুক হিসেবে ৬০ লাখ টাকা নেন। এরপরও বিভিন্ন অজুহাতে শশুর বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য স্ত্রীকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতেন শাওন।
গত কয়েক বছর ধরে কমলগঞ্জ উপজেলায় শমশেরনগর বিএএফ শাহিন স্কুলে সন্তানদের পড়াশুনার জন্য ভাড়া বাসা নিয়ে সেখানে বসবাস শুরু করেন। শাওনের নিজস্ব বাসায় ক্যাবল নেটওয়ার্কের ব্যবসা রয়েছে। সেই ব্যবসা পরিচালনায় শাওন অফিস সহকারি হিসেবে নিয়োগ দেন ছায়েরা আক্তারকে। স্ত্রী ও সন্তানরা বাসায় না থাকার সুযোগে ছায়েরার সাথে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত হয়ে পড়েন শাওন। পরে বিষয়টি শাওনের স্ত্রী জানতে পারলে ওল্টো স্ত্রীকে যৌতুক দাবি করেন এবং সেটা না দিলে সায়েরাকে বিয়ে করে তাঁকে (ইয়াছমীনকে) তালাক দিবেন এমন হুমকি দিতে থাকেন। সম্প্রতি ছায়েরাকে বিয়ে করে ইয়াছমীনকে বাসা থেকে বের করে দেন শাওন।
গত ১৩ আগস্ট রাত সাড়ে নয়টায় ইয়াছমিন সন্তানদের নিয়ে শাওন তাদেরকে বাসায় প্রবেশে বাধা দেন। পরে তিনি এলাকা গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে সন্তানদের নিয়ে বাসায় ঢুকেন। শাওন ও তাঁর ২য় স্ত্রী সায়েরা মিলে ইয়াছমীনকে ঘরে আটকে নির্যাতন করেন। ১৭ আগস্ট ইয়াছমিনের মাতা এসে তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা করান।
এ বিষয়ে ইয়াছমিন সুলতানা চৌধুরী বলেন, ‘আমি সন্তানদের পড়াশুনার জন্য শমসেরনগরে থাকতাম। সেই সুযোগে সায়েরার সাথে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েন শাওন। আমার অনুমতি ছাড়া শাওন দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন এবং গত এক মাস পূর্বে আমার বাসার তালা ভেঙ্গে ওই মহিলাকে নিয়ে জোরপূর্বক বাসায় প্রবেশ করেন এবং আমাকে বের করে দেন।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত তানভীর আহমদ শাওনের মোবাইলে যোগাযোগ করলে মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আব্দুছ ছালেক বলেন, যৌতুক ও নির্যাতন প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়েছে শাওনের বিরুদ্ধে। শাওন ও তাঁর ২য় স্ত্রী পলাতক রয়েছেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।