কুলাউড়ায় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের হাত মেহেদীতে রাঙিয়ে দিলো তরুণীরা
বার্তালোক ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ মার্চ ২০২৫, ৪:০৯ মিনিটকুলাউড়া প্রতিনিধি : ঈদকে ঘিরে সবকিছুতে একটু বেশিই আগ্রহ থাকে শিশুদের, তার মধ্যে অন্যতম ঈদে সুন্দরভাবে মেহেদীতে হাত রাঙানো। অভিভাবকরা চেষ্টাও করেন শিশুদের সকল আবদার বা ইচ্ছা পূরণ করতে। কিন্তু অনেক ইচ্ছেই অপূরনীয় রয়ে যায় সমাজের অবহেলিত সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের।
সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মনে ঈদের আনন্দ কিছুটা হলেও বাড়িয়ে দিতে, মেহেদীর রঙে হাত রাঙাতে দেখা গেলো মৌলভীবাজারের কুলাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে শুক্রবার (২৮মার্চ) বিকেলে স্বেচ্ছাসেবীদের দ্বারা পরিচালিত পথশিশুদের অক্ষরজ্ঞান প্রদানের স্কুল আলোর পাঠশালায়।
মেহেদী ডিজাইন এর উপর কোর্স সম্পন্ন করা হাবিবা ইসলাম ইমা নামে এক তরুনী নিজ উদ্যোগেই নিজের বোনদের নিয়ে আলোর পাঠশালায় পড়তে আসা সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুদের হাত আল্পনায় রাঙিয়ে দেন স্বেচ্ছায়। ঈদকে সামনে রেখে ছোট ছোট শিশুরা সুন্দর ডিজাইনে মেহেদীতে হাত রাঙাতে পেরে তারা আনন্দিত।
মেহেদী দিতে পেরে সুরাইয়া আক্তার জানান, আমি চিন্তায় ছিলাম ঈদে আমি মেহেদী কিনতে পারবো কি না। এখানে আপু সুন্দর কিরে মেহেদী দিয়ে দেয়ায় আমার খুব ভালো লাগছে।
হেপী আক্তার বলেন, আমার বাড়িতে কেউ সুন্দর করে মেহেদী দিতে পারেনা, আর দোকানের মেহেদী কিনাও হয়না। এখানে মেহেদী দিতে পেরে খুব ভালো লাগছে, আমি অপেক্ষায় আছি মেহেদী ধুয়ার পর কতটুকু লাল হয় তা দেখার জন্য।
আলোর পাঠশালার শিক্ষক সৌরভ ভট্টাচার্য জানান, ব্যতিক্রমী আয়োজন নিয়ে আলোর পাঠশালার সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে এসে তাদের মেহেদীতে রাঙিয়ে দেয়ায় শিক্ষার্থীরা অনেক খুশি হয়েছে। তাদের আনন্দ দেখে মনে হচ্ছে তাদের ঈদটাও অনেক রঙিন হবে।
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের হাত মেহেদীতে রাঙাতে এসে হাবিবা ইসলাম ইমা জানান, ছোটবেলা বোনরা আমাকে মেহেদী দিয়ে দিতো। তখন খুব আনন্দ লাগতো, ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে জাগে নিজে সুন্দর করে মেহেদী দেয়া শিখবো৷ সে ইচ্ছা থেকেই মেহেদী ডিজাইন এর উপর কোর্স সম্পন্ন করেছি। এখন আমি মেহেদী নিয়েই কাজ করছি, স্বপ্ন দেখছি বড় উদ্যোক্তা হওয়ার। মেহেদী ডিজাইন কে পেশা হিসেবে গ্রহণ করে তরুণীদেরকেও মেহেদী ডিজাইনের কাজ শিখিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করার। তবে আজ এখানে আসার উদ্দেশ্য হলো, ছোটবেলা আমাদের যদি কেউ মেহেদী দিয়ে দিতো আমাদের খুব আনন্দ হতো। তাই ভাবলাম সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা সবাইতো মেহেদী দেয়ার সুযোগ পায়না। আমি নিজে যদি তাদের হাত মেহেদী দিয়ে সাজিয়ে দেই তারা খুব খুশি হবে। সে লক্ষ্যেই ঈদের আনন্দ কিছুটা হলেও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সাথে ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য তাদের হাত মেহেদী দিয়ে রাঙিয়ে দিয়েছি।