বিএনপির কাউন্সিলে নেতাকর্মীদের সহযোগিতা চাইলেন সম্পাদক প্রার্থী সুফিয়ান আহমেদ
বার্তালোক ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০:২৫ মিনিটকুলাউড়া প্রতিনিধি : রাত পোহালেই আগামীকাল ১৩ সেপ্টেম্বর কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কুলাউড়া উপজেলা শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল। ওই কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করে ভোটের মাঠে চষে বেড়াচ্ছেন তিনজন হেভিওয়েট প্রার্থী। তন্মধ্যে অন্যতম হলেন বিএনপি নেতা ও সাবেক ছাত্রনেতা সুফিয়ান আহমেদ ওরফে আবু সুফিয়ান। সুফিয়ান আহমেদের বাড়ি কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের হাসনপুর গ্রামে।
এদিকে শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কুলাউড়ার একটি অভিজাত রেষ্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করে নিজের বিগত দিনের রাজনৈতিক, সামাজিক কর্মকান্ড সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী সুফিয়ান আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ থেকে তিনি বিএ পাশ করেন। রাজনৈতিক জীবনে তাঁর বিরুদ্ধে ১৮টি মামলা হয়। ২০১৬ সালে কুলাউড়া সদর ইউনিয়নে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ধানের শীষে নির্বাচন করলেও বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের কারচুপির কারণে তিনি পাশ করতে পারেননি। বিগত স্বৈরাচারী সরকারের শাসনামলে রাজপথে থেকে দলের জন্য নিরলসভাবে কাজ করেন। এজন্য তার ওপর অনেক হামলা-মামলা, নির্যাতন হয়েছে। স্বৈরাচারী আমলে রাজপথে থেকে মশাল মিছিল, বিক্ষোভ মিছিল, রেললাইন অবরোধ, হরতালসহ দলীয় সকল কর্মকান্ডে সক্রিয় থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। দলের একজন কর্মী হয়ে তিনি দলকে সুসংগঠিত করতে উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মী তৈরি করেছেন। দলের দুর্দিনে তিনি দলকে ছেড়ে যাননি। দলকে নিজের সময়, মেধা, শ্রম দিয়ে সুসংগঠিত করেছেন। তিনি বলেন, দলের পদ-পদবী ব্যবহার করে অনেকে সুবিধাবাদী রাজনীতি করেছেন। তিনি কখনো সুবিধাবাদী রাজনীতি করেননি। বিগত কাউন্সিলে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দলকে সুসংগঠিত করে কাজ করে আসছেন। এবারের কাউন্সিলে তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়ে বলেন, কাউন্সিলে যদি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তাহলে তিনি এ পদে আর নির্বাচন করবেন না। পরের কাউন্সিলে তিনি অংশগ্রহণ করে যদি কোন পদে নির্বাচিত হন তাহলে আগামীর কাউন্সিলে অংশ না নিয়ে নতুন নেতৃত্ব তৈরি করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়ে রাজনীতি থেকে অবসর নেয়ার ঘোষণা দেন সাবেক ছাত্রনেতা সুফিয়ান আহমেদ।
তিনি আরো বলেন, কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়ে ভোটের মাঠে দিনরাত চষে বেড়াচ্ছি। উপজেলার সবক’টি ইউনিয়নে নেতাকর্মী ও সম্মানিত ভোটারদের ব্যাপক সাড়া ও সহযোগিতা পাচ্ছি। আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ড বিবেচনা করে আমাকে নেতাকর্মীরা মহা-মূল্যবান ভোট দিয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করবেন বলে আমি দৃঢ়বিশ^াসী। আমি আমার কর্মদক্ষতা, কর্মতৎপরতা ও অভিজ্ঞতার দ্বারা কুলাউড়া উপজেলা বিএনপি ও তার সকল অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনকে শক্তিশালী করার অঙ্গীকার করছি।
একনজরে সুফিয়ান আহমদের রাজনৈতিক বৃত্তান্তঃ ১৯৯৩-৯৪ সালে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কুলাউড়া সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুলাউড়া সদর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৯৪-৯৫ সালে কুলাউড়া সরকারি কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুলাউড়া সদর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬-৯৮ সালে কুলাউড়া সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ও কুলাউড়া উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৯-২০০১ সালে কুলাউড়া সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ও উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক, ২০০২-২০০৪ সালে মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রদলের সমাজসেবা সম্পাদক ও উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক, ২০০৫-২০০৬ সালে উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৯-২০২৪ সালে কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। রাজনৈতিক জীবনে সাতবার কারাভোগ করেন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ২৬ মে কারামুক্ত হয়ে হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন। এছাড়া গায়েবী অনেক মামলার আসামীও আছেন। সুফিয়ান আহমেদ বলেন, ২০১২ সালের ২২ জুলাই উপজেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মান্নার নেতৃত্বে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্য আমার ওপর হামলা করা হয়। হামলায় আমি গুরুতর আহত হই। এছাড়া আমার ব্যবহৃত গাড়ি ভাংচুর করা হয়। আমার পরিবারের তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করে রাতে পুলিশ আমার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তিন ভাইকে গ্রেপ্তার করে। রাজনৈতিক কারণে আমি অর্থনৈতিক, পারিবারিক, সামাজিকভাবে বাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি।
সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আন্তর্জাতিক সংগঠনে সম্পৃক্ততাঃ কুলাউড়ার জনপ্রিয় পরিবেশবাদী সংগঠন শেড অব নেচারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন সুফিয়ান আহমেদ। লাল গোলাপ সমাজ কল্যাণ সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সব্যসাচী স্বজন সমাবেশ ও জাসাসের উপদেষ্ঠা, এপেক্স ক্লাব অব মৌলভীবাজারের সাবেক সেক্রেটারি এন্ড ডিএনএডিটর ও সাবেক জুনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন।
ক্রীড়াঙ্গনে সম্পৃক্ততাঃ টেবিল টেনিস প্লেয়ার্স এসোসিয়েশন কুলাউড়ার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ব্যাডমিন্টন প্লেয়ার্স এসোসিয়েশন কুলাউড়া ও প্রগতিশীল স্পোর্টিং ক্লাব সদর ইউনিয়ন কুলাউড়া, সুপার নোভা ক্রিকেট ক্লাব কুলাউড়ার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন সুফিয়ান আহমেদ। #