‘শাকিলা ও নয়নতারা’ খুঁজে পেল নতুন ঠিকানা
বার্তালোক ডট কম
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ অক্টোবর ২০২২, ৬:৩৯ মিনিটমাহফুজ শাকিল : মাতা-পিতাহীন দুই কন্যা শাকিলা (২১) ও নয়নতারা (২৩)। ওই দুই তরুণী গত দুই বছর আগে সিলেট সমাজসেবা পরিচালিত শিশু পরিবার থেকে মৌলভীবাজারে এসেছে। এখানে বেড়ে উঠে শাকিলা ড্রাইভিং ও নয়নতারা ট্রেইলারিং শিখছে। তাঁরা কেউই কখনো ভাবেনি তাদের নতুন ঠিকানা ফিরে পাবে। অবশেষে তাদের সেই চিন্তার ভাবনা দূর হলো। আর এটির দায়িত্ব নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রচেষ্টায় সমাজ সেবা অধিদপ্তর পরিচালিত এতিম ও প্রতিবন্ধী মেয়েদের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বেড়ে উঠা ওই দুই কন্যা ‘শাকিলা ও নয়নতারার’ জাঁকজমক ও আড়ম্বরপূর্ণভাবে বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। অভিভাবকহীন দুই কন্যার বিয়ের অভিভাবক জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান নিজেই।
দুই কন্যা শাকিলা ইসলাম ও নয়নতারা। ওদের মধ্যে শাকিলা ইসলামের বিয়ে হয় আল আমিনের সঙ্গে এবং নয়নতারার বিয়ে হয় মো. সাব্বিরের সঙ্গে। বর আল আমিন টিউবওয়েল মিস্ত্রি এবং সাব্বির সিএনজিচালিত আটোরিকশার চালক। এই দুই নবদম্পতিকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে এক লাখ করে মোট দুই লক্ষ টাকা উপহার দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) এই দুই দম্পতির জাঁকজমকপূর্ণ বিয়ের আয়োজন করে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ও জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর। বিয়েতে প্রায় তিনশ মানুষের খাবারের আয়োজন করা হয়। বিয়ের অনুষ্ঠানে সংরক্ষিত নারী আসনের (মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জ) সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, জেলা আওয়ামীলগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সমাজসেবক মোঃ সাইফুর রহমান বাবুলসহ সরকারি বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার একেএম মিজানুর রহমান জানান, ‘এরা আমার মেয়ের মত। তাদের বিয়েতে যাতে কোনো ধরনের কমতি না হয়, এজন্য সব আয়োজন করা হয়। দুই মেয়ের অনুষ্ঠানে তিন শতাধিক অতিথির জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়। জেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এ বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে আমার দুই কন্যার জন্য দোয়া করেছেন।
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান মুঠোফোনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘একজন পিতা তাঁর কন্যাদের যেভাবে বিয়ে দেন, তেমনি এ কন্যাদের পিতা হিসেবে একজন কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার মতো আমরা তাদের বিয়ে দিচ্ছি। সকল নিয়ম, সকল আনুষ্ঠানিকতায় এ বিয়ের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হল। কোন জিনিসের কমতি ছিলনা। এছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দুই নবদম্পতিকে এক লক্ষ করে মোট দুই লক্ষ টাকা উপহার দেওয়া হয়েছে। তাদের খোঁজখবর সবসময় নেয়া হবে।
উল্লেখ্য এর আগে, গত বুধবার উৎসবমুখর পরিবেশে দুই কন্যার গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদ, জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, জেলার পুলিশ সুপার মো. জাকারিয়া, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিনা রহমান বাঁধনসহ জেলা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।